OrdinaryITPostAd

বাটিক প্রিন্ট করার সহজ পদ্ধতি-বাটিক প্রিন্ট করতে কী কী লাগে

বাটিক প্রিন্ট শব্দের সাথে প্রায় অধিকাংশ মানুষই পরিচিত। এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা বাটিক প্রিন্ট করার সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবো। বাটিক প্রিন্ট কি?  কিভাবে করতে হয়? এ সকল বিষয় আজকের পোস্টটির মাধ্যমে আলোচনা করব।


 

বাটিক প্রিন্ট হচ্ছে এক ধরনের নকশা যা কাপড়ের উপর তৈরি করা হয়।সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে খুব সহজেই বাটিক প্রিন্ট করা যায়। ঘরে বসে খুব সহজ পদ্ধতিতে যাতে এ কাজটি করা যায় তার জন্য আজকের এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবেন। 


পোস্ট সূচিপত্র :বাটিক প্রিন্ট করার সহজ পদ্ধতি -বাটিক প্রিন্ট করতে কি কি লাগে 


বাটিক প্রিন্ট কি 



বাটিক প্রিন্ট করার সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হলে সবার আগে আমাদের যদি জানতে হবে সেটি হচ্ছে বাটিক প্রিন্ট কি? কাপড়ের উপর নিজের পছন্দমত নকশা এঁকে সেই নকশার জায়গায় গলানো মোম দিয়ে ঢেকে রংয়ের পানিতে ডুবিয়ে পরবর্তীতে মোম পরিষ্কার করার ফলে যে নকশা সৃষ্টি হয় তাকে বাটিক প্রিন্ট বলা হয়ে থাকে। এটি অনেকের জানা কিংবা অনেকের অজানাও হতে পারে। 


বাটিক প্রিন্ট করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি বিদ্যমান রয়েছে কিন্তু এই বিভিন্ন পদ্ধতির মাঝে যে পদ্ধতিটি সবচেয়ে সহজ সেই পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করব। বাটিক প্রিন্ট করতে সাধারণত যে পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলো হলো -ব্রাশ পদ্ধতি, জান্টিং পদ্ধতি, ব্লক পদ্ধতি ইত্যাদি। ব্রাশ পদ্ধতি বলতে সাধারণত ঘরের ভিতর ব্রাশ ব্যবহার করে সেই ব্রাশের সাহায্যে নকশা করা কাপড়ে উপর মোম লাগানো কে ব্রাশ পদ্ধতি বলা হয়। 


বাটিক প্রিন্ট করতে বিভিন্ন জিনিসের প্রাথমিক পদ্ধতি


বাটিক প্রিন্ট করতে প্রাথমিক কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। বিভিন্ন পদ্ধতির মাঝে  সবচেয়ে সহজ উপায়ে ছাপার কাজটি সম্পন্ন করতে হলে সর্বপ্রথম যেটি করতে হবে সেটি হলো কাপড়টিকে ভালোভাবে ধুতে হবে। অর্থাৎ কাপড়ের যেই মাড় থাকে সেটিকে ধুয়ে সরিয়ে নিতে হবে। কাপড়টিকে ভালোভাবে পরিষ্কার করলে সহজেই সুতায় রং বসবে। 

যদি কাপড়ে মার থাকে তাহলে সহজে এবং ভালোভাবে কাপড়ীতে রং বসবে না। তাই  ধোঁয়ার ক্ষেত্রে এই দিকটি ভালোভাবে লক্ষ্য করতে হবে। সুতরাং ছাপার আগে কাপড়ের প্রস্তুতির দিকে যাতে কোন ত্রুটি না থাকে থাকে এ বিষয়টি খেয়াল করতে হবে। এই পদ্ধতিকে অনেক সময় ডিগামীং বলে অভিহিত   করা হয়। এটি হচ্ছে কাপড় প্রস্তুতের প্রাথমিক পদ্ধতি। 


বাটিক প্রিন্ট করতে প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ 



বাটিক প্রিন্ট সহজ পদ্ধতিতে করতে হলে সবার আগে এর প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ সম্পর্কে জানতে হবে। এইসব উপকরণগুলো খুব সহজেই পাওয়া যায় যার ফলে বাটিক প্রিন্ট করা সবচেয়ে সহজ। প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ নিজে উল্লেখ করা হলো :-


  1. সাদা মোম ১ কেজি 
  2. লাল মোম ১ কেজি 
  3. রঞ্জন  ১/৪ কেজি 

এই সকল উপকরণ খুব সহজেই লাভ করা যায়। রংবেরঙের মোম যেকোনো দোকানে খুঁজলেই পাওয়া যায়। মোমের ক্ষেত্রে যদি কোন আলাদা রং এর মোম পাওয়া যায় তাহলে সেই ভিন্ন রং টি ও ব্যবহার করা যেতে পারে। মোম সংগ্রহ করার পর ভালোভাবে মোমের মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। অর্থাৎ অল্প আছে মোম টিকে গলাতে হবে। এই গলানো মোমটি হচ্ছে মোমের মিশ্রণ। 


রং তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপকরণ সমূহের প্রয়োজন। এই সকল উপকরণ ছাড়া বাটিক প্রিন্ট করা যায় না। তাই বাটিক প্রিন্ট করতে হলে রং তৈরির সঠিক উপকরণ গুলো জানতে হবে।  রং তৈরির বিভিন্ন উপকরণগুলো হলো :-


  1. প্রুশিয়ান রং ১ চামচ
  2. লবণ - ৩ চামচ উঁচু করে
  3. পানি ১/২-২ লিটার
  4. কাপড় কাচার সোডা ১ চামচ

রং তৈরির জন্য উপরের এই সকল প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ সংগ্রহ করতে হবে। সঠিক পরিমাণে সকল উপকরণ নিলে ঠিকভাবে রং তৈরি হবে না। তাই রং তৈরির ক্ষেত্রে উপকরণের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। 

কাপড়ে মোম লাগানোর সহজ নিয়ম 


কাপড়ে মোম লাগানোর জন্য সর্বপ্রথম কাপড়টিকে ভালোভাবে ধুয়ে মাড় ছাড়াতে হবে। মাড় ছাড়ানো হয়ে গেলে তারপর কাপড়টিকে ভালোভাবে স্ত্রী করে নিতে হবে। অর্থাৎ কাপড়ে মোম লাগানোর আগে কাপড়টিকে ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। 


কাপড় প্রস্তুত করা হয়ে গেলে এরপর কাপড়টিতে পছন্দ মতন যে কোন ধরনের নকশা অংকন করতে হবে। এটি সম্পূর্ণ নিজের উপর নির্ভর করে যে কিভাবে নকশা অংকন করতে হবে। কাপড়ের নকশা অঙ্কন করা হয়ে গেলে তারপর সেই গলিত মোমের মিশ্রণটি নিতে হবে। 


নকশা অংকন করা কাপড়টিতে ব্রাসের সাহায্যে নকশার  উভয় পিঠে  আগে থেকে তৈরি করা গলিত মোম লাগিয়ে নকশা ঢেকে দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে একটা জিনিস লক্ষ্য রাখতে হবে সেটি হচ্ছে মোম লাগানোর সময় সেই মোমের মিশ্রণটিকে সব সময় গরম হতে হবে। 


অর্থাৎ অল্প আঁচে মমি মিশ্রণটিকে রেখে দিতে হবে। যাতে মন সব সময় গরম থাকে আর জমে না যায়। তাহলে খুব সহজেই ব্রাশের সাহায্যে মমি মিশ্রণটি কাপড়ে লাগানো যাবে। কাপড়ের সঠিকভাবে মোম লাগানোর জন্য এ পদ্ধতিটি অবলম্বন করতে হবে। 
 
 



বাটিক প্রিন্টের এর জন্য কাপড় কিভাবে রং করতে হয়



কাপড়ে রং করতে হলে সর্বপ্রথম মোম লাগানোর পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ করতে হবে।  এরপরে কাপড়ের রং করতে হবে। রং করার জন্য সর্বপ্রথম মোম লাগানো কাপড়টি কে ঠান্ডা পানিতে আধা ঘন্টার মতো ভিজিয়ে রাখতে হবে। প্রতিটি নিয়ম মেনে সম্পূর্ণ পদ্ধতি পালন করলে খুব সুন্দরভাবে বাটি প্রিন্ট করা যায়। সুতরাং রং করার জন্য সর্বপ্রথম মোম লাগানো কাপড়টিকে ঠান্ডা পানিতে রাখতে হবে। 


এরপর কুসুম গরম পানিতে রং গুলিয়ে পরিমাণ মতো ঠান্ডা পানির সাথে মিশিয়ে কাপড়টি সেই গোলানো রঙের পানির মধ্যে রেখে কিছুক্ষণ যাবৎ নাড়াচারা  করতে হবে।যাতে রঙটি কাপড়ের সাথে মিশে যায়। এরপর রং থেকে কাপড়টিকে উঠিয়ে সেই রংয়ের  দ্রবণের ভিতরে সামান্য পরিমাণে লবণ মিশিয়ে রাখতে হবে।


লবন মিশানো হয়ে গেলে আবার কাপড়টিকে পানিতে ডুবাতে হবে এবং ভালোভাবে নাচায় দিতে হবে যাতে সম্পূর্ণ রংয়ের পানি কাপড়ে মিশে যায়। কিছুক্ষণ পর সেই পানিতে কাপড় কাচার সোডা মিশিয়ে ৩০ নাড়াচাড়া করতে হবে। নাড়াচাড়া করা শেষ হলে কাপড়টিকে শুকাতে হবে। 


একটি রং দিয়ে সম্পূর্ণ কাপড়টি রং করতে না চাইলে অর্থাৎ একের অধিক রং করতে হলে প্রথমবার রং করার পর সেই রং শুকিয়ে গেলে পুনরায় যেকোনো পছন্দ মতো রং নির্বাচন করে পুনরায় প্রয়োজনীয় অংশ মোম দিয়ে ঢেকে আবার রং করতে হবে। অর্থাৎ আগের মতোই সম্পূর্ণ প্রসেসিং পুনরায় করতে হবে। তবে দ্বিতীয়বারে রংয়ের মাত্রাটা যাতে গাঢ় থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 



কিভাবে মোম ছাড়ানো যায় সেই উপায় 



উপরোক্ত সকল ধারাবাহিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে করার পরে রং করা এবং মোমযুক্ত কাপড় পাওয়া যাবে। অর্থাৎ কাপড়ে রং করা সম্পূর্ণ হবে।এখন শুধু কাপড়ে লাগানো মোমগুলোকে সঠিক পদ্ধতিতে তুলে ফেলতে পারলেই বাটিক প্রিন্ট সম্পূর্ণ হবে। এই পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে নিচে উল্লেখ করা হলো :-


  1. সর্বপ্রথম শুকানো কাপড়টিকে ৩০ মিনিট ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে যাতে মোমগুলো কিছুটা নরম হতে পারে। 
  2. এরপর একটি পাত্রতে এক লিটারের মতো গরম  পানি ফুটাতে হবে।
  3. সে ফুটন্ত গরম পানিতে কাপড় কাচার সাবান ১/৪অংশ কেটে মিশাতে হবে। 
  4. গরম পানিতে সম্পূর্ণ সাবানটি ভালোভাবে গলে গেলে সে ফুটন্ত পানিটিতে মনযুক্ত কাপড়টি দিয়ে দিতে হবে। 
  5. কাপড়টিকে কমপক্ষে ১৫মিনিটের মতো সিদ্ধ করে নিতে হবে যাতে মোম গুলো পুরোপুরি নরম হয়ে যায়। 
  6. এরপর গরম পানি থেকে কাপড়টিকে উঠিয়ে ঠান্ডা পানিতে ভাবে ধুয়ে নিতে হবে যাতে কাপড়ের কোন অংশে মন লেগে না থাকে। 
  7. এরপর কাপড়টিকে ভালোভাবে ধুয়ে শুকাতে হবে। 

উপরোক্ত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি একের পর এক ধারাবাহিকভাবে সম্পূর্ণ করতে হবে।কোন একটি  নিয়ম এলোমেলো হলে পরবর্তীতে জামেলা সৃষ্টি হতে পারে । তাই প্রতিটি কাজ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করতে হবে। এর মাধ্যমে কাপড়ে খুব সুন্দর বাটিক প্রিন্ট এর কারুকার্য তৈরি হবে। 


শেষ কথা 


বাটিক প্রিন্ট করা খুব সহজ একটি উপায়। এই নকশাটি কাপড়কে আকর্ষণীয় করে তোলে। প্রায় অধিকাংশ ব্যক্তি বাটিক প্রিন্ট নকশাযুক্ত কাপড় পড়তে পছন্দ করে।  আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে বাটিক প্রিন্ট করার সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে। আশা করি এই পোস্টটি সকলের উপকারে আসবে। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট কিংবা তথ্য পেতে ওয়েবসাইটিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। 






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিম ব্লগার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪