কাপড়ে টাইডাইকরন পদ্ধতি-কিভাবে টাইডাই করা হয় জামাতে
Mim Blogger ✅
27 Aug, 2025
আমাদের অনেকের টাইডাইকরন পদ্ধতি সম্পর্কে জানা আছে।অনেকে আবার এই টাইডাইকরন পদ্ধতি সম্পর্কে অজানা। কেউ কেউ এই পদ্ধতির নাম শুনলেও কিভাবে টাইডাইকরন করতে হয় জামাতে সেটা জানে না।আজ এই পদ্ধতিটি বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করবো।জামাতে নকশা করার জন্য এটা একটা বিশেষ মাধ্যম।
আমরা অনেকে চাই জামাতে নকশা করার জন্য একটি বিশেষ পদ্ধতি যেটির মাধ্যমে জামায় বা কাপড়ে নকশা করলে ফুটে ওঠবে।কাপড় নকশায়ন করার জন্য টাইডাইকরন পদ্ধতিটি খুব ভালো।টাইডাই হলো বেঁধে কাপড়ে রং লাগিয়ে নকশা করা।আজ এই বিশেষ পদ্ধতি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করবো তার জন্য পুরো পোস্টটি মন দিয়ে শেষ পর্যন্ত দেখতে হবে।
টাইডাই হলো বেঁধে রং করার একটি প্রক্রিয়া।সাধারণত জামা বা কাপড় কে বেঁধে রং এর পানিতে ডুবিয়ে নকশা তৈরি করাকে টাইডাইকরন বলে।এটি যে কোন কাপড়ে করা যায় তবে মার যুক্ত কাপরে টাইডাই করা জাবে না।টাইডাই করতে -সুতি,লিলেন,সিল্ক ইত্যাদি কাপড় নেয়া হয়।পাতলা সুতি কাপড় টাইডাই এর জন্য উপযুক্ত কারন এই কাপড়ে যেকোনো রং পাকাপোক্ত ভাবে বসে।তবে এই জন্য যে বাকি ভিন্ন রকমের কাপড়ে বসবে না এটা ভুল।যে কোনো কাপড়েই টাইডাই করা যাবে।টাইডাই করতে বিভিন্ন রকমের রং পাওয়া যায়।যেমন :ভ্যাট রং,সালফার রং,প্রুশিয়ান রং।ভ্যাট রং কে টাইডাই করার সবচেয়ে ভালো রং হিসেবে বিবেচনা করা হয়।এর দামও বেশি থাকে।বাকি অন্যান্য রং গুলোর জন্য বিশেষ প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয়।
ভ্যাট কালার টাইডাই করার জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয়।এর টেকসই ভালো।খুব সহজেই এই রং ব্যবহার করা যায়।টাইডাই করার জন্য পদ্ধতি বা ধাপ অবলম্বন করতে হয়।ঠিকমতো সব ধাপ অবলম্বন করলে টাইডাই করা সহজ হয় আর ভালো ভালো নকশা করা যায়।বেঁধে রং এর পানিতে চুবালে একদিকে রং ভরে আরেক দিকে ভরে না এর মাধ্যমে ডিজাইন এর সৃষ্টি হয় সেটা আমরা টাইডাই বলে থাকি।আগের ঘুগের মানুষ এইসব পদ্ধতি ব্যবহার করে কাপড়ে, জামায়,গেঞ্জি ইত্যাদিতে ডিজাইন করতো।আমরা ভ্যাট রং দিয়ে কিভাবে টাইডাই করে সে সম্পর্কে জানবো।
টাইডাই করার ফলে কি হয়
টাইডাই করার ফলে কাপড়ে বিভিন্ন রকমের ডিজাইন এর সৃষ্টি হয়।শক্ত করে কাপড় বাঁধলে সেই জায়গাতে রং পৌঁছায় না বাকি সব জায়গায় রং পৌছালেও।এর ফলে কাপড়ে ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন রকমের ডিজাইন তৈরি করা হয় আমরা তাকে টাইডাইকরন বলি।কাপড়ে ডিজাইন প্রনয়ন হলে দেখতেও বেশ সুন্দর লাগে।আমরা অনেকে জেটাকে টাইডাইকরন কাপড় বলে থাকি।অনেকে সখের বসে জামায় বা গেঞ্জি অথবা কাপড়ে রং করে থাকে এই প্রক্রিয়াতে।আবার কেউ কেউ টাইডাই ডিজাইন পছন্দ করে যার ফলে এটি অবলম্বন করে।
টাইডাই করার জন্য দরকারী সরঞ্জাম
এটি একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। আগের মানুষ তারা নিজস্ব চিন্তা চেতনা দ্বারা ডিজাইন করতো এই পদ্ধতিতে।যার জন্য এটি বেশ পরিচিতি লাভ করেছে।ডিজাইন করার ক্ষেএে ভিন্ন সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়ে থাকে। কারন রং করে ডিজাইন কে ভিন্ন ভিন্ন রুপ দিতে আর টাইডাই কাজ সঠিকভাবে করতে হলে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কাপড়ে টাইডাই করার পদ্ধতির জন্য বেশ কিছু সরঞ্জাম এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই সরঞ্জাম ব্যাতীত টাইডাই হবে না।চলুন জেনে নেই কি কি লাগবে নকশা করার জন্য।নিচে তালিকা আকারে দেওয়া হলো:
প্লাস্টিকের বড় বালতি ১টি
মগ প্লাস্টিকের ১টি
চা চামচ ২টি
বড় চামচ
বাটি প্লাস্টিকের ২টি
সসপ্যান ১টি
স্পন্জ ১ টুকরো
চুলা
ভ্যাট রং তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দ্রব্য।
কাপড়ে টাইডাই করার পদ্ধতির জন্য বাঁধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । নকশা করতে হলে কাপড় কে টাইড করে বাঁধতে হবে যাতে একদকে রং গেলেও অন্যদিকে রং পৌঁছাতে না পারে।এই নকশা করার বিশেষত্বই হলো বাঁধা।বেঁধে রং করার নামই টাইডাই করা।টাই-ডাই করন এর একটি জনপ্রিয় মাধ্যমই হলো বাঁধা।বাঁধা ছাড়া কাপড়ে টাইডাই পদ্ধতি সম্ভবত না। তাই বাঁধার প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক।
বাঁধার সরঞ্জাম
টাইডাই করার জন্য কাপড় কে বাঁধার যেসব সরঞ্জাম প্রয়োজন সেগুলো হলো:
সুতা
দিয়াশলাই এর কাঠি
সূচ
ছোট পাথর, ছোট পুতি
পেন্সিল, রাবার, স্কেল
টাইডাইকরন পদ্ধতি কিভাবে করতে হয়
এটি করার জন্য সর্বপ্রথম ভ্যাট রং করার জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও পরিমান সম্পর্কে অবগত হতে হবে।কারন এর মূল হলো রং।রং করেই বিভিন্নভাবে ডিজাইন করা হয়। তাই রং এর বিষয়ে আগে জানতে হবে।ভ্যাট রং করার জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও পরিমাণ হলো:
ভ্যাট রং১/৪ তোলা
কস্টিক সোডা ১ তোলা
হাইড্রোজেন ২ তোলা
কাপড় ১ গজ।
কাপড়ে টাইডাই পদ্ধতির জন্য প্রতিটি কাজকে ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে হবে যাতে ফলাফল দেখে তৃপ্তি লাভ করা যায়।এই নকশা করা খুব সহজ একটি কাজ।যদি মনোযোগ দিয়ে সকল কাজ ভালো ভাবে করা যায়।নিচে একের পর এক এর ধারাবাহিকতা নিয়ে কাপড়ে টাইডাই করার পদ্ধতি বিস্তারিত বলা হলো:
প্রথমে কাপড়টিকে ভালোভাবে ধুতে হবে যাতে করে মাড় না থাকে। কারণ মাড়যুক্ত কাপড়ে টাই ডাই করা সম্ভব না।
তারপর কাপড়টিকে পছন্দমত নকশা অনুযায়ী সুতা দিয়ে শক্ত করে বাঁধতে হবে। সুতা দিয়ে কাপড়ে বিভিন্ন রকমের নকশা প্রণয়ন করা যায়। তাই এটি নিজস্ব পছন্দের উপর নির্ভর করে।
সম্পূর্ণ কাপড়টি যাতে পানিতে ডুবে যায় এমন হাঁড়িতে পানি গরম করতে হবে।
একটি বাটিতে পরিমাণ মতো রং নিতে হবে।
কস্টিক সোডা ও হাইড্রোজেন পৃথকভাবে একটা একটা করে গরম পানির হাঁড়িতে গুলে দিতে হবে।
বাঁধা কাপড়টি ঠান্ডা পানিতে ভালোভাবে ভিজিয়ে নিয়ে তারপর রঙের হাঁড়িতে ডুবিয়ে দিতে হবে।আবার চাইলে কাপড়ের উপর দিয়ে রং দিয়েও নকশা করা যায়।যে যেভাবে সাচ্ছন্দ্য বোধ করে সেভাবেই রং করতে পারবে।চাইলে সম্পূর্ণ কাপড় না ভিজিয়ে হাফ কাপড়েও রং করা সম্ভব। টাই-ডাই অনেকভাবেই করা হয়।
কম আঁচে কাপড়টি ১০ মিনিট রঙের পানিতে জাল দিতে হবে।
এরপর কাপড়টি উপরে নিচে ভালোভাবে নাড়াতে হবে যেন রং সম্পূর্ণ কাপড়ে ভালোভাবে লাগে।
উপরের সম্পূর্ণ কার্যক্রম ধারাবাহিক ভাবে পালন করলে টাইডাই করা সহজ।কোন একটি ছেড়ে করলেই ফলাফল আশা অনুযায়ী লাভ হবে না।
শেষ কথা
আজকের পোস্টটির মাধ্যমে কিভাবে কাপড়ে টাইডাই করা হয় সেই পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। টাই-ডাই বিষয় জানতে হলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনদিয়ে পড়তে হবে আশাবাদী যে এটি দ্বারা আপনারা উপকৃত হবেন।এই সম্পর্কে অনেককিছু জানতে পারবেন।আজকের জন্য এখানেই সমাপ্তি পরবর্তী পোস্ট পেতে সঙ্গে থাকুন।
মিম ব্লগার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url